ল্যিসমানিয়াঃ সরষের ভিতর থাকা ভূত!
রক্তের শ্বেতকণিকা দেহের প্রতিরক্ষা বিভাগের গুরুত্ববহ দায়িত্ব পালন করে। দেহের বহিঃশত্রু দমনে এরা নিয়োজিত। শ্বেতকণিকার একটি উপাদান ম্যাক্রোফেজ। শরীরে রোগ জীবাণু প্রবেশ করলে এদের ভক্ষণ করা ম্যাক্রোফেজের কাজ। কিন্তু ল্যিসমানিয়া (Leishmania donovani) এই ম্যাক্রোফেজের ভিতরে বাসা বাঁধে এবং বংশ বিস্তার করে।
ভূত ঝাড়তে সরষে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু সরষের ভিতরেই ভূত থাকলে কী হবে!
ল্যিসমানিয়া আমাদের দেহে কালা জ্বর (Visceral leishmaniasis) নামক রোগ সৃষ্টি করে। ল্যিসমানিয়া (Leishmania donovani) অ্যামিবা বা ম্যলেরিয়ার জীবাণুর ন্যায় একটি এককোষি প্রাণী। এরা Phlebetomus গনের স্যান্ডফ্লাই এর মাধ্যমে বাহিত হয়। স্যান্ডফ্লাই এর নারী সদস্যরা মশার মতো রক্ত চোষে। কামড়ানোর সময় ল্যিসমানিয়া জীবানু মানুষের দেহে প্রবেশ করে। দেহে প্রবেশ করলে ম্যক্রোফেজ এদের গিলে ফেলে। কিন্তু এরা ল্যিসমানিয়া কে কাবু করতে পারেনা। বরং ল্যিসমানিয়া এদের দেহে বাসা বাঁধে এবং সংখ্যা বৃদ্ধি করে। পর্যাপ্ত পরিমানে সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে ম্যাক্রোফেজ প্রাচীর ফেড়ে এরা বেরিয়ে আসে এবং শরীরের আনত্র ছড়িয়ে পড়ে।আক্রান্ত হবার পর রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেতে ২ থেকে ৬ মাস লাগতে পারে। ত্বক কালো, দেহে ক্ষত, যকৃৎ ও প্লীহা বড় হয়ে যাওয়া এ রোগের প্রধান লক্ষণ।
Ⓒ Want et. al 2016. |
সূর্য্য কান্ত কালা জ্বর গবেষণা কেন্দ্র নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ময়মনসিংহ শহরে। এক সময় দেশের এ অঞ্চলে কালা জ্বরের প্রকোপ ছিল। তবে সুখের বিষয় এখন আর এ রোগটি তেমন দেখা যায় না।
- Azizul Islam Barkat
Department of Zoology
University of Dhaka.
Comments
Post a Comment